ভারতের / ইন্ডিয়ান টাকার রেট - আজকের INR থেকে BDT রেট

১ ভারতীয় রুপি সমান

আজকের ইন্ডিয়ান টাকার রেট - জেনে নিন ইন্ডিয়ান টাকার মান সম্পর্কে বিস্তারিত। প্রতিদিনের লেনদেন, চাকরি বা ভ্রমণের পরিকল্পনায় আমরা অনেকেই জানতে চাই আজকের ইন্ডিয়ান টাকার রেট কত বা ১ রুপি সমান কত টাকা।

বিশেষ করে যারা, বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা, চাকরি, পড়াশোনা বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে ভারতে যান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটা অনেক উপকার হবে।

যাইহোক, এই আর্টিকেলের মধ্যে আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে জানতে পারব যে ইন্ডিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা সেই সম্পর্কে।

ভারতের মুদ্রার নাম কি? (ইন্ডিয়ান রুপি)

ভারতের সরকারিভাবে ব্যবহৃত মুদ্রার নাম হলো "রুপি" (ইংরেজিতে: Rupee)। ভারতীয় রুপির প্রতীক হলো ₹ এবং কোড হলো “INR”, যা ২০১০ সালে সরকারিভাবে চালু করা হয়। এই প্রতীকটি ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতীয় রুপিকে চিহ্নিত করা হয় INR (Indian Rupee) কোড দিয়ে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (Reserve Bank of India বা RBI) মূলত ভারতের মুদ্রা ব্যবস্থা পরিচালনা করে। বর্তমানে ভারতে ১, ২, ৫, ১০ টাকার কয়েন প্রচলিত রয়েছে এবং ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ২০০০ টাকার কয়েন প্রচলিত রয়েছে।

আজকের ইন্ডিয়ান টাকার রেট - রুপি টু টাকা

ইন্ডিয়ার মুদ্রার রেট প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে পারে, সেটা খুবই স্বাভাবিক। দেশীয় বাজার, রাজনীতি এবং বিশ্ব বাজারে উপর নির্ভর করে ভারতের মুদ্রার রেট প্রতিটা মুহূর্তে পরিবর্তন হতে থাকে।

উল্লেখিত এই, ইন্ডিয়ান টাকার রেট মূলত ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লেনদেনের জন্য নির্ধারিত হয়। সাধারণত, লোকাল এক্সচেঞ্জ হাউজ, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন মোবাইল এক্সচেঞ্জ ওয়ালেট গুলোর ক্ষেত্রে এই রেট কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

প্রতিনিয়ত ইন্ডিয়ান রেট পরিবর্তন হওয়ার কারণে সকল ইন্ডিয়ান প্রবাসীদের বা ভ্রমণ পরিকল্পনা কারীদের উচিৎ নিয়মিত ইন্ডিয়ান রুপি রেট জেনে নেওয়া, কারণ সামান্য রেটের কারণে ও সব মিলিয়ে বড় অঙ্কের ক্ষতি হতে পারে।

ইন্ডিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা - ১ রুপি সমান কত টাকা

আজকের ভারতের 1000 টাকা বাংলাদেশের কত টাকা, বাংলাদেশ ১০০ টাকা ইন্ডিয়ান রুপি আজকের রেট, ভারতের ৫০০ রুপি বাংলাদেশের কত টাকা, ৫০ রুপি বাংলাদেশের কত টাকা ইত্যাদি সব হিসাব পাবেন আপনি নিচে। তবে, আপনি চাইলে ১ থেকে কোটি টাকার হিসাব ও বের করতে পারেন উপরে দেওয়া ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে।

INR থেকে BDT - ভারতের টাকার মান কত (আজকের ইন্ডিয়ান রুপি রেট)

ভারতীয় রুপি (INR) বাংলাদেশী টাকা (BDT)

অনেকে জানতে চাই, বাংলাদেশ ১০০ টাকা ইন্ডিয়ান রুপি আজকের রেট, ইন্ডিয়ান ১০০ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা, ভারতের ১০০০ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা, ইত্যাদি সম্পর্কে। সত্য হলো ভারতের মুদ্রার নাম রুপি, তাই অনলাইন ইন্ডিয়ান ১ রুপি সমান কত টাকা, ১ রুপি সমান কত টাকা, ভারতের ১০০ রুপি সমান কত টাকা ইত্যাদি সম্পর্কে। আশা করি আপনি ভারতের মুদ্রার নাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ভারতে মুদ্রার রেট পরিবর্তনের কারণসমূহ

ভারতের মুদ্রার রেট সবসময় একই থাকে না, এই রেট প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তন হয়। নিয়মিত এই রেট পরিবর্তনের কারণে বেশ কিছু দেশী ও বৈশ্বিক কারণ থাকে। নিচে সেই কারণ গুলো তুলে ধরা হলো:

যেই মুহুর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় রুপির চাহিদা বেড়ে যায়, যেমন; ভারত থেকে বেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে তখন রুপির মান বৃদ্ধি পায়। আবার যদি আমদানি বৃদ্ধি পায় বা বিদেশি মুদ্রার প্রয়োজন বাড়লে রুপির মান কমে যেতে পারে।

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা ধরে রাখতে পারে, তাহলে রুপির মান স্থিতিশীল থাকে। রিজার্ভ কমে গেলে রুপির মান পড়ে যেতে পারে।

ভারতে সুদের হার বেশি থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রুপিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়, ফলে রুপির চাহিদা বাড়ে এবং রেট বাড়ে। আর সুদের হার কম হলে রুপির রেট হ্রাস পায়।

যদি ভারতের মধ্যে পণ্যের দাম বেড়ে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি বেশি হয়, তাহলে রুপির ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে রুপির মানও কমে।

বিদেশ থেকে যদি বেশি বিনিয়োগ আসে (যেমন শেয়ারবাজারে বা শিল্প খাতে), তাহলে রুপির চাহিদা বাড়ে, এবং এর ফলে রেট বাড়তে পারে। বিনিয়োগ কমে গেলে রুপির মান কমে যায়।

ভারতের প্রচলিত কাগজের নোট ও কয়েন

ভারতের প্রচলিত কাগজের নোট ও কয়েন সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো:

ভারতের প্রচলিত কাগজের নোট (Banknotes)

বর্তমানে ভারত সরকার ও RBI যেসব নোট প্রচলনে রেখেছে, সেগুলো হলো:

ভারতের প্রচলিত কয়েন (Coin)

ভারতে বর্তমানে নিচের কয়েনগুলো প্রচলিত:

জেনে রাখুন: ভারতের সব নোটেই মহাত্মা গান্ধীর ছবি থাকে। নোটগুলোর পেছনে ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনা বা বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বের ছবি থাকে। সমস্ত নোটে হিন্দি ও ইংরেজিতে মূল্য লেখা থাকে। দৃষ্টিহীনদের জন্য টেক্সচার বা বিশেষ চিহ্ন থাকে।

ভারতের মুদ্রার ইতিহাস | ইন্ডিয়ান রুপি কিভাবে এসেছে?

ভারতের মুদ্রার ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন ভারতেই বিশ্বের প্রথম কয়েকটি মুদ্রার ব্যবহার শুরু হয়েছিল। ইতিহাসে দেখা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে মহাজনপদ যুগে ভারতে ধাতব মুদ্রা চালু ছিল। সেগুলো ছিল সাধারণত রূপা ও তামার তৈরি।

"রুপি" শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ “রূপ্য” থেকে, যার অর্থ "রূপার তৈরি"। এই শব্দ থেকে পরবর্তীতে "রুপি" নামটি এসেছে। অর্থাৎ, রুপি মূলত রুপার মুদ্রার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে শের শাহ সূরি "রুপি" নামে একটি রৌপ্য মুদ্রা চালু করেন, যার ওজন ছিল প্রায় ১১.৫ গ্রাম। সেটাই পরবর্তীতে ভারতীয় রুপির ভিত্তি হয়ে ওঠে। মুঘল সাম্রাজ্য এই রুপিকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে।

ব্রিটিশ শাসনের সময় ভারতে রুপির মান ও রূপ বদলে যেতে থাকে। ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ রাজ প্রথমবার কাগজের নোট চালু করে, যা ছিল ভারতের আধুনিক কাগজের মুদ্রার সূচনা। সেসময় রুপিকে ব্রিটিশ পাউন্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করে রাখা হতো।

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) আধুনিক রুপি প্রকাশ শুরু করে। প্রথম দিকে, নোট গুলোতে ইংরেজ রাজাদের ছবি থাকলে ও স্বাধীনতার পর থেকে সেগুলোর পরিবর্তে মহাত্মা গান্ধী সিরিজ চালু হয়।

বর্তমানে রুপি শুধু কাগজ বা কয়েনেই সীমাবদ্ধ নয়। এখন ভারতে ডিজিটাল রুপি বা ই-রুপি (e₹) চালু হয়েছে, যা ভবিষ্যতের ভার্চুয়াল লেনদেনের পথ তৈরি করছে।

ইন্ডিয়ান রুপি (INR) এক্সচেঞ্জ করার নিয়ম

বাংলাদেশে অনেকেই চিকিৎসা, পড়াশোনা বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভারতে যান। এ সময় তাদের প্রয়োজন হয় ভারতীয় রুপি (INR)। তাই জেনে রাখুন, ইন্ডিয়ান রুপি (INR) এক্সচেঞ্জ করার নিয়ম গুলো;

সরকারি অনুমোদিত ব্যাংক: ভারতীয় রুপি এক্সচেঞ্জ করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বা সরকারি অনুমোদিত ব্যাংক এর মাধ্যমে তা করতে হবে। হুন্ডির মতো অবৈধ পন্থা অবলম্বন করলে আইনগত ঝুঁকি হতে পারে।

অনলাইন মানি এক্সচেঞ্জ: বর্তমান যুগে অনলাইন মানি এক্সচেঞ্জ অনেক জনপ্রিয়, আপনি চাইলে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ওয়ালেট যেমন; (পেপাল, ওয়েবমানি, পেওনিয়ার, বাইনান্স) ইত্যাদির মাধ্যমে অনেক সহজে ইন্ডিয়ান রুপি টু বাংলাদেশি টাকা এক্সচেঞ্জ করতে পারবেন। বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক বড় এক্সচেঞ্জ কমিউনিটি রয়েছে যার কারণে অনলাইন এক্সচেঞ্জ অনেক বেশি সহজ। তবে রিস্ক এর পরিমাণ বেশি।

মানি এক্সচেঞ্জ সীমা: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর একজন বাংলাদেশি নাগরিক সর্বোচ্চ ১২ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা এক্সচেঞ্জ করতে পারেন। ভারত ভ্রমণের জন্য নির্দিষ্ট রুপি বরাদ্দ পাসপোর্টে এনডোর্স করা হয়।

নোট: ভারতীয় রুপি এক্সচেঞ্জ করার আগে সর্বশেষ এক্সচেঞ্জ রেট জেনে নেওয়া খুব জরুরি। প্রতিটি এক্সচেঞ্জ হাউসে রেট কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। আপনি চাইলে AjkeTakarRate.Com থেকে আপডেটেড রেট দেখতে পারেন।

শেষ কথা

ভারতীয় রুপি (INR) এটি শুধুমাএ একটি মুদ্রা নয়, বরং ভারত এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রুপির ইতিহাস যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি এর বর্তমান ব্যবহার ও মূল্য ও আমাদের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসা কিংবা অনলাইন লেনদেন— প্রতিটি ক্ষেত্রেই রুপির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই ইন্ডিয়ান রুপির রেট, এক্সচেঞ্জ নিয়ম ও মুদ্রার ধরন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা প্রত্যেকের জন্য জরুরি। সঠিক উপায়ে সচেতনভাবে এবং বৈধ পন্থায় রুপি এক্সচেঞ্জ করলে আপনি যেমন নিরাপদ থাকবেন, তেমনি আপনার লসের পরিমাণও কমে যাবে।

আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাকে ভারতের মুদ্রা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছে। যদি তাই হয় তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দিন।

আরো পড়ুনঃ